যে পরকালকে অস্বীকার করে সে মুসলমানের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যায়। কারণ পরকালে বিশ্বাস করা ইসলামের মৌলিক বিষয়। সুতরাং যে মুসলমান হিসেবে বাকী রইল না তার বিষয়ে করণীয় হল তাকে ইসলামের বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া। তার ডাউটগুলো ক্লিয়ার করা। এতে যদি সে তার অসামঞ্জস্যপূর্ণ বক্তব্য থেকে ফিরে আসে তবে ভাল। নতুবা তাকেও অন্যদশটি অবিশ্বাসীদের কাতারে ফেলে রাখাই শ্রেয়। এটা নিয়ে তার পক্ষে সাফাই গাওয়া যেমন কাম্য নয় ঠিক অশ্লীল বাক্য প্রয়োগও উচিত হবে না।
সম্প্রতি একজন নারী মডেল রেডিও প্রোগামে সম্ভবত কারো প্রশ্নের উত্তরে বলেন যে, "আমি পরকালে বিশ্বাস করি না। যা চোখে দেখতে পাই না তা আমি বিশ্বাস করি না।" এরকম কথা আজকের ধারাবাহিকতায় নতুন কিছু নয়। মুসলমান নামধারী এমন মস্তিষ্কের দাসের অস্তিত্ব অপ্রতুল নয়। তবে এসব ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষনীয় হল, পাব্লিকলি কেউ এমন মন্তব্য করলে আমরা সাধারণত দুটি দল দেখতে পাই। ১ম দল যারা মস্তিষ্কের দাস, তারা এমন বক্তব্যকে বক্তার ব্যক্তি স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত মত বলে চালিয়ে দেওয়ার ওকালতিতে নেমে পড়ে। তারা বলে এটা যার যার ব্যক্তিগত মত। এখানে হট্টগোলের কিছু নেই। আর ২য় দল যারা সাধারণত ধর্মীয় বিষয়ে বিশ্বাসী, তারা উক্ত বক্তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে চৌদ্দ গুষ্টির কৃষ্টি উদ্ধার করে ফেলেন। তাও আবার যেনতেন ভাষায় নয়। খাঁটি অশ্লীল ভাষায়!
এখন আমার কথা হল, এই দল দুটির কোনটাই তাদের নীতির ওপর বহাল নেই। মস্তিষ্কের গোলামরা বলে, কারো ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত থাকতে পারে এটা নিয়ে হৈচৈ করার কিছু নেই। তাহলে অপরপক্ষ যখন বক্তৃতার বিপক্ষে অশ্লীল ভাষায় তাদের যার যার নিজস্ব মন্তব্য প্রকাশ করে সেটা নিয়ে তোমাদের মাথা ব্যাথা হয় কেন? সেক্ষেত্রে তোমরা নিরবতা পালন করো না কেন?
যদি এটা কোন সারগর্ভ কথা নয়। এখানে মূল কথাটি হল, যদি কোন অবিশ্বাসী অমুসলিমের মুখ থেকে পরকাল অবিশ্বাসের কথা বের হয় তাহলে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু মুসলমান হয়ে পরকাল অবিশ্বাসের কথা বলবে আর এটা তার ব্যক্তিগত মত হিসেবে আমাদের মেনে নিয়ে চুপ বসে থাকতে হবে তা কখনোই না। কারণ ইসলাম গোমূত্র খাওয়া বা যত্রতত্র মাথা টেকার মত তুচ্ছ কোন ধর্ম নয়। ধর্মীয় বিষয়ে ইসলামের দেওয়া অভিমতই হতে হবে একজন মুসলমানের মতামত। আর পরকাল বিষয়ে ইসলাম অভিমত দিয়েছে যে, পরকালের অস্তিত্ব আছে। পরকাল চির শাশ্বত। সুতরাং এ বিষয়ে ভিন্নকোন ব্যক্তিগত মতামত মুসলমানের থাকতে পারে না। কেউ যদি ভিন্ন মতামত ধারণ করে তবে সে ইসলামের বাইরে।
দ্বিতীয় কথা হল, আমরা যারা বিশ্বাসী আছি তাদেরও মাথায় রাখতে হবে যে, অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড সামনে আসলে আমার কর্তব্য হল, সেটাকে ইসলামী পন্থায় সংশোধন করা। সংশোধন করতে না পারলে যদি প্রতিবাদ করা যায় তাহলেও তাও ইসলামী পন্থায় হওয়া। অশ্লীল বাক্য দ্বারা অনৈসলামিক কাজের প্রতিবাদ করাটাও অনৈসলামিক কাজ। যা থেকে আমাদের বিরত থাকা জরুরী।
আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দিন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন