শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৮

আসানসোলের দাঙ্গায় অসাম্প্রদায়িক মুসলিম


সৌম্যের প্রতীক, ইমাম ইমদাদুল্লাহ 
আসানসোলের যে অঞ্চলে মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল সেই চাঁদমারি আর কুরেশী মহল্লা পেরিয়ে অনেকটা ভেতরে নূরানী মসজিদ। বৃহস্পতিবার খবর এলো, মসজিদের ইমাম মুহাম্মদ ইমদাদুল্লাহর নিখোঁজ ছেলের লাশ পড়ে আছে স্থানীয় হাসপাতালে। তাঁকে বলা হলো হাসপাতালে গিয়ে লাশ সনাক্ত করতে।

আসানসোলের পরিস্থিতি তখনো দুদিনের হিন্দু-মুসলিম সংঘাতের জের ধরে থমথমে। সবকিছু বন্ধ। চারিদিকে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা গুজব।

ইমাম মুহাম্মদ ইমদাদুল্লাহ হাসপাতালে গেলেন। সনাক্ত করলেন নিজের ছেলের ক্ষত-বিক্ষত লাশ। নখ উপড়ে নেয়া হয়েছে। ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের কোপ। লাশটি আধপোড়া, মনে হচ্ছে কেউ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।

আগের দুদিন ধরে নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজেছেন ইমদাদুল্লাহ। সেই সঙ্গে মহল্লার সব মানুষ। কোথাও পাওয়া যায়নি তাকে।

ক্ষত-বিক্ষত লাশটি যখন মহল্লায় আনা হলো, পরিস্থিতি হয়ে উঠলো আরও অগ্নিগর্ভ।

"ইমাম সাহেবের ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটা শুনে প্রথমে সবারই মাথায় রক্ত চড়ে গিয়েছিল" বলছিলেন মহল্লার বাসিন্দা মুহম্মদ ফারহাদ মালিক। "এটা তো রক্ত গরম করে দেওয়ার মতোই ঘটনা।"

পুত্রশোকে কাতর ইমাম ইমদাদুল্লাহ। আসানসোলকে আরও সহিংসতার কবল থেকে বাঁচিয়েছেন তিনি।

ইমাম মুহাম্মদ ইমদাদুল্লাহ বুঝতে পারলেন, এই প্রতিহিংসার রাশ টানতে হবে এখনই। নইলে আরও রক্ত ঝরবে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চলে যাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রাণ যাবে আরও মানুষের।

একটা মাইক হাতে বেরিয়ে পড়লেন তিনি। মহল্লায় মহল্লায় ঘুরে সবার প্রতি আবেদন জানালেন, আপনারা শান্ত হোন।

পুত্র হারানোর কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে গেল ইমামের। তবে তার মধ্যেও বলছিলেন, "এই অবস্থাতেও আমি সবার কাছে আবেদন করতে রাস্তায় বেরিয়েছিলাম - সবাইকে বুঝিয়েছি যে আমার যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা যেন আর কোনও বাপ-মায়ের না হয় - কেউ যেন দাঙ্গা না বাধায় ছেলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।"

পুত্রশোকের মধ্যেও এলাকায় ঘুরে ছেলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্তি না ছড়ানোর জন্য তার এই আবেদনে কাজ হলো। লোকজন ঘরে ফিরে গেল।

আমাদের দেশের তথাকথিত যে সমস্ত অসাম্প্রদায়িক বাঙালি বাবুরা যারা মুসলিম ও ইসলামের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার আওয়াজ দিতে দিতে রক্তবমি করেন তাদের কাছে প্রশ্ন...

আজ আপনাদের কী মন্তব্য?  নিজের তরুণ ছেলের লাশ দাফন করে সম্প্রীতি আর সাম্যের যে ডাক দিয়ে যাচ্ছেন অসহায় পিতা, আপনি সেই মুসলিমকে কীভাবে সাম্প্রদায়িক বলে গালি দেন? এমন অবান্তর কথা বলার সময় আপনাদের বুদ্ধি কি অণ্ডকোষের মাঝে লুকিয়ে থাকে?
যদি কোন হিন্দু পুরোহিতের সন্তান মুসলমানদের হাতে নিহত হত তবে তো মৌলবাদ আর সাম্প্রদায়িকতার ধুঁয়া তুলে কম্পিউটার কীবোর্ড ভেঙ্গে ফেলতেন। আজ কেন আপনাদের মুখে কুলুপ আঁটা? পৃথিবীর ইতিহাসে এক ইমাম ইমদাদুল্লাহ এর আত্মত্যাগের এমন আরেকটি নযির অন্যান্য মতালম্বীদের মাঝে কি দেখাতে পারবেন?

তারপরও যদি বলেন মুসলমানগণ  সাম্প্রদায়িক। ইসলাম সাম্প্রদায়িকতা শিখায়, তবে বুঝবো আপনাদের মাথার মধ্যে শুধু গোমূত্র আর গোবরগঙ্গাই বহে। অন্যকিছু না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নাভীর নীচের অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা

নাভীর নীচের অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা হলো : পায়ের পাতার উপর ভর করে বসা অবস্থায় নাভী থেকে চার পাঁচ আঙ্গুল পরিমাণ নীচে যে ভাঁজ বা রেখা সৃষ্টি হয় ...