১ম প্রশ্নঃ আজকাল কারো কারো মুখে শোনা যায় যে, শবে বরাত বলতে কিছু নেই, এ রাতের ফযীলত বিষয়ে যত রেওয়ায়েত আছে সব মওযূ বা যয়ীফ। তাই শবে বরাতকে ফযীলতপূর্ণ রাত মনে করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা জায়েয নয়। তাদের কথা কি ঠিক? যদি ঠিক না হয় তাহলে হাদীস ও সুন্নাহর আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : শবে বরাত অর্থাৎ পনেরো শা’বানের রজনীর ফযীলত সম্পর্কে সহীহ হাদীস রয়েছে। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, (তরজমা) আল্লাহ তাআলা অর্ধ শা’বানের রাতে (শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।-সহীহ ইবনে হিব্বান হাদীস : ৫৬৬৫
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফযীলত প্রমাণিত হওয়ার জন্য এই একটি হাদীসই যথেষ্ট। তবুও হাদীসের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে এ বিষয়ক আরো হাদীসউল্লেখ করা সম্ভব। নিম্নে আরেকটি হাদীস উল্লেখ করা হল। হযরত আ’লা ইবনুল হারিছ রাহ. থেকে বর্ণিত, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নামাযে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে, আমার আশঙ্কা হল, তাঁর হয়তো ইনতেকাল হয়ে গেছে। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা! অথবা বলেছেন, ও হুমায়রা! তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না। নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান এটা কোন্ রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি তখন বললেন, এটা হল অর্ধ শা’বানের রাত। (শা’বানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ শা’বানের রাতে তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি প্রদান করেন, ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।-শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/৩৮২,৩৮৩
উপরোক্ত হাদীস থেকে এ রাতের ফযীলত যেমন জানা যায় তদ্রূপ এ রাতের আমল কেমন হওয়া উচিত তাও বোঝা যায়। অর্থাৎ দীর্ঘ নামায পড়া, সেজদা দীর্ঘ হওয়া, দুআ ও ইসে-গফার করা ইত্যাদি। মোটকথা, সহীহ হাদীস থাকা অবস্থায় শবে বরাতের ফযীলত ও গুরুত্বকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা এবং এ সংক্রান- সকল রেওয়ায়েতকে মওযূ বা যয়ীফ বলা যে কত বড় অন্যায়, তা তো বলাই বাহুল্য।
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফযীলত প্রমাণিত হওয়ার জন্য এই একটি হাদীসই যথেষ্ট। তবুও হাদীসের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে এ বিষয়ক আরো হাদীসউল্লেখ করা সম্ভব। নিম্নে আরেকটি হাদীস উল্লেখ করা হল। হযরত আ’লা ইবনুল হারিছ রাহ. থেকে বর্ণিত, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নামাযে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে, আমার আশঙ্কা হল, তাঁর হয়তো ইনতেকাল হয়ে গেছে। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা! অথবা বলেছেন, ও হুমায়রা! তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না। নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান এটা কোন্ রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি তখন বললেন, এটা হল অর্ধ শা’বানের রাত। (শা’বানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ শা’বানের রাতে তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি প্রদান করেন, ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।-শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/৩৮২,৩৮৩
উপরোক্ত হাদীস থেকে এ রাতের ফযীলত যেমন জানা যায় তদ্রূপ এ রাতের আমল কেমন হওয়া উচিত তাও বোঝা যায়। অর্থাৎ দীর্ঘ নামায পড়া, সেজদা দীর্ঘ হওয়া, দুআ ও ইসে-গফার করা ইত্যাদি। মোটকথা, সহীহ হাদীস থাকা অবস্থায় শবে বরাতের ফযীলত ও গুরুত্বকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা এবং এ সংক্রান- সকল রেওয়ায়েতকে মওযূ বা যয়ীফ বলা যে কত বড় অন্যায়, তা তো বলাই বাহুল্য।
২য় প্রশ্ন : অনেকে শবে বরাতের পরদিন রোযা রাখেন। এ বিষয়ে শরীয়তের হুকুম কী জানতে চাই।
উত্তর : শা’বানের এক তারিখ থেকে সাতাইশ তারিখ পর্যন্ত রোযা রাখার বিশেষ ফযীলতের কথা হাদীস শরীফে আছে। তাছাড়া আইয়ামে বীয তথা প্রতি মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে রোযা রাখার ব্যাপারে হাদীস শরীফে উৎসাহিত করা হয়েছে। সেই সাথে যয়ীফ সনদে বর্ণিত একটি হাদীসে বিশেষভাবে পনেরো তারিখের রোযা রাখার নির্দেশনাও পাওয়া যায়। হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (তরজমা) পনেরো শা’বানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাও এবং পরদিন রোযা রাখ।-সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৩৮৪
আগেই বলা হয়েছে যে, যেহেতু বিভিন্ন সহীহ হাদীসে শা’বান মাসের রোযার সাধারণ ফযীলত এবং আইয়ামে বীযের রোযার ফযীলত উল্লেখিত হয়েছে পাশাপাশি যয়ীফ সনদে উপরোক্ত হাদীসটিও বিদ্যমান রয়েছে তাই কেউ যদি এই সকল বিষয় বিবেচনায় রেখে পনেরো শা’বানের রোযা রাখেন তাহলে তিনি ছওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।
আগেই বলা হয়েছে যে, যেহেতু বিভিন্ন সহীহ হাদীসে শা’বান মাসের রোযার সাধারণ ফযীলত এবং আইয়ামে বীযের রোযার ফযীলত উল্লেখিত হয়েছে পাশাপাশি যয়ীফ সনদে উপরোক্ত হাদীসটিও বিদ্যমান রয়েছে তাই কেউ যদি এই সকল বিষয় বিবেচনায় রেখে পনেরো শা’বানের রোযা রাখেন তাহলে তিনি ছওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন